বীরবল

প্রথম প্রকাশঃ ডিসেম্বর ৭, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

upathit buddhiসেদিন বাদশা আকবর সভায় বসে আছেন। তাকে খুবই চিন্তিত দেখাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে সবাইকে ডাকা হয়েছে অথচ এখনো মন্ত্রীর দেখা নেই। বাদশার মতো অন্যরাও চিন্তিত, কি হলো কি হলো!

অবশেষে দুই ঘন্টা পর মন্ত্রী মশায় ধীরে ধীরে সভাকক্ষে প্রবেশ করলেন। তার নাকি ভীষণ জ্বর।

তখন সবাই একসাথে বলে উঠলো, ‘সেকি বৈদ্য দেখাননি’?

তিনি তখন বললেন, ‘আরে মশায় দেখাবো না কেন, ঢেড় দেখিয়েছি। রাতে লোক পাঠিয়েছি আর  সকালে বৈদ্য এলো। রাজ্যে বৈদ্য আছেইবা ক’জন’।

সবাই বলল, ‘তা ঠিকই রাজ্যে বৈদ্যের সংখ্যা কম’।

তখন বীরবল বললেন, ‘না দেশে বৈদ্যের সংখ্যাই বেশি’।

শুনে মন্ত্রীতো রেগে-মেগে অস্থির। একেতো বেচারার জ্বর তার উপরে ঠাট্টা! সভায় যারা বীরবলের বিপক্ষে তারা বাদশার কাছে নালিশ দিয়ে বসলেন,‘ প্রমাণ চাই নইলে বীরবলের দন্ড চাই’।

বাদশা আকবরও রেগেই ছিলেন। তাই তারও এমন রসিকতা পছন্দ হলো না। রাজার আদেশ হলো, প্রমাণ না করতে পারলে বীরবলকে শূলে চড়তে হবে । সেদিনের মতো সভা শেষ হলো। যে যার মতো বাড়ি ফিরে গেল।

মন্ত্রীতো বেজায় খুশি। ‘ যাক, বেটা বীরবলের উচিত শিক্ষা হবে। কাল প্রমাণ না করতে পারলেই শূলে চড়বে’।

পরদিন যথা সময়ে সবাই সভায় হাজির কিন্তু বীরবলের কোন দেখা নেই।

মন্ত্রী বলল, ‘পালিয়েছে, বীরবল রাজ্য ছেড়ে পালিয়েছে।’

শেষমেশ বেলা গড়িয়ে গেলে বীরবল সভায় এলো।

মন্ত্রী মশায় জিঙ্গেস করলেন- ‘কিহে পন্ডিত, প্রমাণ পেলে’?

বীরবল বলল,‘কি করে প্রমাণ বের করবো বলুন? কাল সভা থেকে গিয়ে যেই স্নান করেছি অমনি সেকি সর্দি, সারেই না ’।

মন্ত্রী বললেন, ‘সর্দি আবার কোন অসুখ নাকি । সরিষার তেল গরম করে মাখলেইতো সেরে যায়’।

সেনাপতি বললেন, ‘তুলসির রস খেলেওতো পারতে’।

উজির মশাই উঠে বললেন- ‘মধু খেলেও কিন্তু সর্দি সারে’।

একে একে সবাই তাদের মতামত দিতে থাকল। এক পর্যায়ে স্বয়ং বাদশা আকবরও পরামর্শ দিতে শুরু করলেন ।

তখন বীরবল বলল, ‘ঢেড় হয়েছে। থাক, থাক। এখন আপনারাই বলুন দেখি, এখানে রোগী কয়জন। একা আমি, আর আপনারা সবাই কিন্তু বৈদ্য । তবে দেশে রোগীর সংখ্যা বেশি না বৈদ্যের সংখ্যা বেশি’?

 

প্রতিক্ষণ/এডি/জেবিএম

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G